আসন্ন সোনারগাঁ পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম সম্প্রতি বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্মী সভা করে গরম বক্তব্য দিলেও পৌরসভা আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের আস্থা নেই তাদের উপর। তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করেন, নৌকার টিকিট যে-ই পাবে তাকেই ভোটারদের মন জয় করে ভোট আদায় করতে হবে। কেননা পৌরবাসী কখনোই কায়সার-কালামকে বিশ্বাস করে ভোট দিবে না।
পৌরসভা আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানায়, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডারের আসামী কুখ্যাত নূর হোসেনের সহচর হিসেবে পরিচিত মাহফুজুর রহমান কালাম গত পৌরসভা নির্বাচনে লোক দেখানো কয়েক দিন নৌকার গণসংযোগ করলেও পরোক্ষভাবে নৌকার বিরোধিতা করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী (বর্তমান মেয়র) সাদেকুর রহমান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করেছেন। এছাড়া গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারফ হোসেনের বিরোধীতা করে ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। এছাড়া গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তিনি দুটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বিরোধীতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কাজেই চোখের সামনে যে নেতা বারবার নৌকার বিরোধীতা করে আসছে, তিনি এখন নিজেকে নৌকার ফেরীওয়ালা দাবি করে গরম বক্তব্য দিলেও পৌরসভা আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা তার উপর কোন আস্থা রাখতে পারছে না।
এদিকে সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সারের উপরও আস্থা নেই তৃণমূল আওয়ামীলীগের। তাদের দাবি, কায়সার শুধু নিজের প্রয়োজনের সময় কর্মীদের কাছে আসে। আর কর্মীদের প্রয়োজনের সময় তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এর চাক্ষুষ প্রমাণ হলো করোনা ভাইরাস। সোনারগাঁয়ে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লকডাউন দেওয়া হলে অর্থ ও খাদ্যের অভাবে আওয়ামীলীগের অসংখ্য তৃণমূল নেতাকর্মীর জীবনে দুর্বিষহ কষ্ট নেমে এসেছিল। তখন তাদের কোন খোঁজ খবরই নেননি নেতা আব্দুল্লাহ আল কায়সার। এছাড়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কর্মীরা বিপদের পড়লে তিনি তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে কায়সার ভক্তদের একটি বিরাট অংশ ইতিমধ্যে ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর সঙ্গে যোগ দিয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিশ্বায়নের এই যুগে জনগণ এখন চাঁপাবাজির রাজনীতিকে বয়কট করছে। সোনারগাঁ পৌরসভা নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম হবে না। কাজেই মেয়র হতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই যোগ্যতার প্রমাণ দেখিয়ে ভোটারদের মন জয় করে ভোট আদায় করতে হবে। কারও হুমকি ধমকিতে কোন লাভ হবে না।